ওয়েব ডেস্ক: আর কয়েকদিন পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো (Durga Puja)। চারদিকে উৎসবের আমেজ, মণ্ডপ সাজানো, কেনাকাটা, প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে জোরকদমে। তবে এই আনন্দের মাঝেও দুঃখের ছায়া আরামবাগের মহিলা ঢাকিদের (Female Dhaki) মনে। প্রতিবছর যেমন বাইরে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আমন্ত্রণ আসে, তেমনই এবারও মহারাষ্ট্রের পুনে, নাগপুর, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এমনকি ওড়িষা থেকেও ডাক এসেছিল। কিন্তু বাঙালি (Bengali) বিদ্বেষের ভয়ে তাঁরা বাইরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।
সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর থেকে যে কাজের কার্ড পেয়েছেন, তাতেই তাঁরা মহালয়ার দিন থেকে ১৪ দিন কাজ করবেন। স্থানীয়ভাবে ব্যান্ডেল, চুঁচুড়া, উত্তরপাড়া, কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরে বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করবেন। কিন্তু রাজ্যের বাইরে যাওয়ার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারছেন না কেউই।
আরও খবর: বাঁকুড়ার এই গ্রামে মূর্তি পুজো বারণ, এবার সব নিয়ম ভেঙে আদিবাসী মেয়ের হাতেই মায়ের পুজো
আরামবাগ (Arambagh) মহকুমায় বর্তমানে বেশ কয়েকটি মহিলা ঢাকির দল রয়েছে। এগুলি পরিচালনা করেন প্রশিক্ষক দিলীপ দাস। তাঁর তত্ত্বাবধানে বহু গৃহবধূ এই পেশায় যুক্ত হয়ে সংসারের খরচ চালাচ্ছেন, সন্তানের পড়াশোনার ব্যয় নির্বাহ করছেন এবং সম্মানের সঙ্গে উপার্জন করছেন। তাঁর বাড়ি আরামবাগের সালেপুরে। সেখান থেকেই তিনি বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেন।
নিউ কালীমাতা ঢাক পার্টি-র সোনালী দাস, মানসী দাস, অনিমা দাস, সুষমা দাস, সুপর্না দাস, চন্দনা দাস, অর্চনা দাসরা সংসারের অভাব-অনটনের মাঝেও শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তির জোরেই হাসিমুখে করেন এই কাজ। রামনগর কালীমাতা ঢাক পার্টির লক্ষ্মীমণি মান্ডি, বুল্টি মান্ডি, সুমি মান্ডি, শ্যামলী হাঁসদা, দোলন মান্ডি, সুমিত্রা মুর্মু, চম্পা মল্লিক, অপর্ণা মন্ডল, নমিতা দোলুইদেরও একই অবস্থা। তাঁরা সবাই বাইরে থেকে ডাক পেয়েছিলেন, কিন্তু আতঙ্কের কারণে যেতে পারেননি।
এই আতঙ্ক উৎসবের আনন্দে ছায়াপাত করলেও মহিলা ঢাকীরা দমে যেতে নারাজ। নিজেদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। তাঁদের মন ভেঙে গেলেও, সম্মান রক্ষার জন্য তাঁরা আপস করতে নারাজ। দুর্গাপুজোয় বাজাবেন নিজের রাজ্যেই, আর সেটাকেই সাময়িক আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
দেখুন আরও খবর: